ফেসবুক ও ফোনে কথা বলা থেকে প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু চোখে দেখাদেখি নেই। শুধু কথার সৃষ্ট মায়ায় সুদূর কুমিল্লা থেকে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর সীমন্তবর্তী গ্রামে প্রেমিকের কাছে ছুটে যান কিশোরী প্রেমিকা (১৭)। কিন্তু ছেলের বাড়িতে গিয়ে চোখ খুলে যায় তার। প্রেমিক হতদরিদ্র পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যুবক (২০)। পেশায় দিনমজুর। ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে বাধ সাধে প্রেমিকের পরিবার। চলে বিয়ের প্রস্তুতি। কিন্তু কিশোরী তাতে রাজি নন। পরিত্রাণ পেতে এলাকাবাসীর সহায়তায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে সহায়তা চান তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভূরুঙ্গামারী ইউএনও মো. গোলাম ফেরদৌস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রেমিক দক্ষিণ ধলডাঙ্গা গ্রামের দিনমজুর দুলাল হোসেন দলুর ছেলে হোসাইন আলী (২০)। হোসাইনের একটি চোখে দৃষ্টি শক্তি নেই। তিনি নিজেও দিনমজুরের কাজ করেন বলে জানা গেছে। আর প্রেমিকা (১৭) কুমিল্লার লাকসাম এলাকার বাসিন্দা। তিনি বিবাহিত। তার স্বামী প্রবাসী বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এলাকাবাসী জানান, ফেসবুক ও ফোনে হওয়া প্রেমের সূত্র ধরে গত সোমবার কুমিল্লা থেকে ওই কিশোরী ভূরুঙ্গামারী আসেন। কিন্তু প্রেমিকের বাড়িতে পৌঁছে প্রেমিকের পারিবারিক অবস্থা এবং প্রতিবন্ধিতা দেখে তার ভুল ভেঙে যায়। ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু প্রেমিকার এই সিদ্ধান্তে বাধ সাধেন প্রেমিক। বিয়ে করার জন্য চাপ দেন। বাধ্য হয়ে প্রেমিকা স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে প্রশাসনের সহায়তা নেন। খবর পেয়ে পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তার পরিবারের লোকজনকে ডেকে নিয়ে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
শিলখুড়ি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, প্রেমিক ছেলেটি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। পারিবারিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। মেয়েটির বয়স কম, তবে বিবাহিতা। শুনেছি তার স্বামী বিদেশে থাকে। সে এই প্রেমিককে বিয়ে করতে রাজি নয়। এজন্য পুলিশ অভিভাবক ডেকে মেয়েকে হস্তান্তর করেছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি মুনিরুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি আমাদের হেফাজতে ছিল। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) তার বাবাকে ডেকে নিয়ে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইউএনও গোলাম ফেরদৌস বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে ফোনে খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। পরে তার পরিবারকে খবর দিলে বুধবার মেয়ের বাবা এসে তাকে নিয়ে যান। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে