মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে সবার প্রথমে। গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণকারী ‘স্টাটিস্টা’ এর গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
তালিকায় ভারত ছাড়াও ব্রাজিল, ফিলিপাইন, মেক্সিকো, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্ক রয়েছে। তবে এই শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নেই, যা দেশের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্যের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম। যদিও দেশে মাঝারি থেকে উচ্চ মাত্রার মিথ্যা তথ্যের ঝুঁকি রয়েছে বলে এই গবেষণা প্রতিবেদনে সতর্ক করা করা হয়েছে।
মূলত স্টাটিস্টা হলো জার্মান অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যারা তথ্য সংগ্রহ ও ভিজুয়ালাইজেশন নিয়ে কাজ করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি সমাজকে অস্থিতিশীল করতে মিথ্যা তথ্য অনেক বেশি প্রভাব ফেলে তাই সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।
মাইক্রোসফটের জরিপ অনুযায়ী, ৬০ শতাংশেরও বেশি অনলাইনে ভুয়া খবরের মুখোমুখি হয়েছেন; যেখানে এ হারের বৈশ্বিক গড় ৫৭ শতাংশ। জরিপে অংশ নেয়া অর্ধেকেরও বেশি ভারতীয় জানিয়েছেন, তারা ইন্টারনেট প্রতারণার শিকার হয়েছেন—যা বৈশ্বিক গড় ৫০ শতাংশের চেয়ে বেশি।
অন্যদিকে ৪২ শতাংশ ভারতীয় বলেছেন, তারা ফিশিং বা স্পুফিংয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। অর্থাৎ, তারা নেট দুনিয়াতে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এ জরিপে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, অনলাইন বুলিং, অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন বার্তা, মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকির বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
ভারতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব কর্তৃক অনলাইনে ঝুঁকি ছড়িয়ে পড়ার গতি দ্রুত বাড়ছে। ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতে অনলাইন ঝুঁকি ছড়ানোর হার ৯ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে ২৯ শতাংশে পৌঁছেছে। মোটা দাগে এ জরিপে ভারতে ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকি বাড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০২৪ গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মিথ্যা তথ্য এবং ভ্রান্ত তথ্য ভারতে বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ২০২৪ সালে ৩৪টি সম্ভাব্য ঝুঁকিযুক্ত দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে শীর্ষস্থানে। এই ঝুঁকি এতোটাই ভয়াবহ যে মহামারি সংক্রমণের থেকেই ভয়াবহ।
স্ট্যাটিস্টা বলছে, ২০১৯ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে ভারতের প্রথমবার ভোটারদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ ভুয়া খবরকে বড় সমস্যা হিসেবে দেখেছেন। তবে ভারতীয় রাজনীতিতে মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার নতুন কিছু নয়।
উদ্বেগের বিষয় হলো, আজকের দিনে প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং সামাজিক মাধ্যমের মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যাচাইবিহীন তথ্য সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে, এমনকি সমালোচনামূলক চিন্তাধারার মানুষদের কাছেও